শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নোয়াখালীতে কলেজ ছাত্রীকে শ্লী*ল*তা*হানি: গ্রে/প্তা/র-২ হাসনাত সারজিসকে শু/য়ো/র বলে চাকরী হারালেন উপস্থাপিকা ফ্যা*সি*বাদের দো/স/ররা ঘাপটি মেরে বসে আছে: শামা ওবায়েদ মাগুরার সেই ‘ধ*র্ষ*কে*র’ বাড়ি গুঁ/ড়ি/য়ে দিলো জনতা হাসিনা ফিরে আসেনি, কিন্তু তার কার্যক্রম যেন ফিরে আসছে : দুদু আমার নামে কত বাজে কথা বলে, তারপরও মামলা করিনি, এটাই সংস্কার: আসিফ নজরুল পুলিশের বিশেষ অ/ভি/যানে তাঁতি দল নেতা নোমান কার্তুজ,পটকা ও ই*য়া*বা ট্যা/ব/লেটসহ গ্রে*ফ*তার  বিএনপি ক্ষমতায় এলে পলাতক সব নেতাদের ফিরিয়ে আনা হবে’ নারীর প্রতি স*হিংস*তা ও ধ/র্ষ/ক/দের বিচারের দাবিতে কুড়িগ্রামে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন নি/ষি/দ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোভনের বাবা গ্রে*ফ*তার

জুলাই বিল্পবের শহীদ স্মারক মোড়ক উন্মোচন করলেন আমীরে জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান

আজগর হোসাইন আতিক / ২১ বার পঠিত
আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১:০৯ অপরাহ্ন

জুলাই বিল্পবের শহীদ স্মারক মোড়ক উন্মোচন করলেন আমীরে জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান।

দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের ইতিহাসটা গৌরবের বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, কিছু ইতিহাস মানুষের জন্য হয় আনন্দের, কিছু হয় বিষাদের, আর কিছু হয় গৌরবের। বিশেষত যারা দেশের জন্য জীবন দেন, অতীতেও দিয়েছেন, ‘৪৭ সালে, ৫২’র ভাষা আন্দোলনে ও ৭১-এ এবং সর্বশেষ ’২৪-এর জুলাইয়ে। তাদের ইতিহাসটা গৌরবের।

৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জুলাই ২০২৪ বিল্পবের শহীদ স্মারক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি দেশের ৯টি বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, কুমিল্লা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, কুমিল্লা প্রেসক্লাবে নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, খুলনা প্রেসক্লাবে সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, রাজশাহী প্রেসক্লাবে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, রংপুর প্রেসক্লাবে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মাদ শাহজাহান, সিলেট প্রেসক্লাবে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, বরিশাল প্রেসক্লাবে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল এবং ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক গ্রন্থ ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং স্মরাক গ্রন্থের কপি শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে বিতরণ করেন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক কবি আব্দুল হাই শিকদার, এনডিপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা, জাগপা সহ সভাপতি রাশেদ প্রধান, ঢাবি শিক্ষক সুকমল বড়–য়া, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মো: সেলিম উদ্দিন, ছাত্রশিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাবি শিবির সভাপতি সাদিক কাইয়ুম, শহীদ ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল, শহীদ মাহফুজুর রহমানের পিতা আব্দুল মান্নান, শহীদ ফারহান ফায়াজে পিতা শহীদুল ইসলাম, শহীদ নাসিব হাসান দিয়ানের পিতা মো: গোলাম রাজ্জাক, সৈয়দ মুনতারি রহমান আলিফের বাবা গাজীউর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে ডকুমেন্টারি প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে আমীরে জামায়াত ২৫০০ পৃষ্ঠার ১০ খন্ডে প্রকাশিত জুলাই ২০২৪ বিল্পবের শহীদ স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একটা দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কিছু করণীয় আছে বলে আমরা মনে করি। ২৪ এর আন্দোলনে আমরাও শহীদ ছিলাম। আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো জাতি যেমন মুক্তি পেয়েছে, সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনৈতিক দলটিও একইভাবে মুক্তি পেয়েছে। সুতরাং এই প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন। আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান দিতে ও তাদের থেকে দোয়া নিতে। কারণ তারা সৌভাগ্যবান, তাদের পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।

তিনি বলেন, আজ যে গণমাধ্যমগুলো এখানে এসেছে তারাও কিন্তু ফ্যাসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত ছিলেন না। সেসময় তাদেরকেও জীবন দিতে হয়েছে, রিমান্ডের নামে নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। বিদেশে বসে যারা বাক এবং কলমযুদ্ধ চালিয়েছিলেন, দেশের মাটিতে তাদের পরিবারকে হেনস্তা করা হয়েছে, জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে। এমনকি নারীদেরকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। তাদের রুচি যে কতো নিম্নস্তরের ছিল, এসব কর্মকা- থেকেই তা বোঝা যায়। যারা নিজেদের জীবনটা বিলিয়ে দিয়ে আমাদের আজকের এই পরিবেশটি উপহার দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

তিনি বলেন, দেশ আমাদের সকলের কিন্তু দিনশেষে দেশের পাহারাদারিত্ব করা কিন্তু সকল নাগরিকের কর্ম নয়। এই কাজ কিছু লোক করে। আবার কিছু লোক দেশের নাগরিকদের শান্তি কেড়ে নেয়ার মতো অপকর্মে লিপ্ত হয়। আর অপকর্মটি যারা করে, তারা এটিকে তাদের পেশা মনে করেই করে। একটাসময় তা নিজের অধিকার বলেই মনে করে, আর জনগণকে নিজের প্রজা মনে করে, আর নিজেরা রাজা হয়ে বসে। কিন্তু গাছের ডালে যখন ঝাঁকুনি দেওয়া হয়, ডালের রাজারা তখন উড়ে গিয়ে পড়ে যায়।

জামায়াত আমীর বলেন, আমরা এখনও পরিপূর্ণভাবে ইতিহাস রচনা করতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখন হতাশায় পড়ে যাচ্ছেন। এসময় জাতির পক্ষ থেকে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট শাসক ছিল, তাদের নাম ধর্মগ্রন্থেও উঠে এসেছে। একই পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিস্টরা ইতিহাস পড়ে, কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নেয় না। আমাদের দেশের ইতিহাস বিকৃতির ইতিহাস। দেশের ইতিহাস অনেকে যার যার মতো রচনা করেছেন।

শফিকুর রহমান বলেন, আবু সাঈদের শাহাদাত ছিল জুলাই আন্দোলনের একটি টার্নিং পয়েন্ট। একটা নিভৃত পরিবারের ছেলেটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। সে জেনেশুনেই শহীদ হওয়ার জন্য বুক পেতে দিয়েছিল। তার পথ ধরে বাকি শহীদরা বলেছে, আবু সাঈদ আমার ভাই, আমরাও শাহাদাতের সিঁড়িতে পা রাখতে চাই। শহীদ ভাইয়েরা তার পরিবারকে বলেছে, আমরা যদি শহীদ হয়ে যাই, তোমরা তাতে কেঁদো না। এতেই বোঝা যায়, দেশের মানুষ কতটা নির্যাতিত ছিল।

তিনি বলেন, আমরা একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সুন্দর বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই রাজনৈতিক দল ও এর অংশীজনদের বলতে চাই, বিপ্লবের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোনোও কাজ আপনারা করবেন না। যদি করেন, তাহলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে, তাদের রক্তকে অপমান করা হবে। আর যারা জীবিত শহীদ রয়েছেন, তারা ভীষণ কষ্ট পাবে ও অভিশাপ দেবে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আড়াই হাজার পৃষ্ঠার দশ খণ্ডের এ স্মারক গ্রন্থ তৈরী হওয়ার পর আরো ৯৩ জন শহীদের তথ্য এসেছে। এ স্মারক গ্রন্থটি প্রকাশ চলমান থাকবে। যতক্ষণ পযন্ত শহীদদের তথ্য আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ অব্যাহত থাকবে। শহীদরা কোন দলের পরিচয়ে নয়, জাতির মুক্তির জন্য জাতীয় সংগ্রামে জীবন দিয়েছে।

এএইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, জামায়াত এ স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করে দায়মুক্ত হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। এটি রাষ্ট্রীয় দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। বিপ্লবের একটি ঘোষণা পত্র থাকতে হয়। আজকেও বিপ্লবের ঘোষণাপত্র তৈরি করতে পারেনি। সরকার অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা দিয়ে এই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হবে। শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। আর ৫ আগস্টকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করতে হবে। এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এ বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ভাতা নিয়ে কাড়াকাড়ি হয় কিন্তু শহীদদের নিয়ে কেউ ভাবে না। ভারত বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সর্ম্পক কিভাবে তৈরী করবে তা ভাবতে হবে। তারা এখনো পতিত খুনি হাসিনাকে ফেরত দেয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আগামী বিপ্লব হবে ইসলামী বিপ্লব। বিপ্লবের জন্য বড় কোন দলের প্রয়োজন হয় না। ৫ আগস্ট তা প্রমাণিত হয়েছে। আপাতত ফ্যাসিবাদ দূর করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তিনি আহবান জানান।
আব্দুল হাই শিকদার বলেন, সরকার যেটি করতে পারে নাই, জামায়াতে ইসলামী সেটি করিয়ে দেখিয়েছে। এক অসাধ্য সাধন করেছে জামায়াত। জাতির তরফ থেকে আমি জামায়াতকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
Theme Design By Shahidul Islam